ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পানে’ বিধ্বস্ত ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা চালুর পাশাপাশি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
‘আম্পানে’র আঘাতে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এই রাজ্যের পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় দানা বেঁধে ওঠা জন অসন্তোষের প্রেক্ষাপটে মানুষকে ধৈর্য্য ধারণ করার আহ্বান জানিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘দু’দিনের মধ্যে সব কিছু চাই? সেটা নিয়ে প্ররোচনা, উত্তেজনা ছড়াতে হবে? আমরা সময় পেলাম কখন? আপনারা চাইলে আমার মুন্ডু কেটে নিতে পারেন। জানি, মানুষের খুব দুর্ভোগ হচ্ছে। সে জন্য হাতজোড় করে ক্ষমা চাইছি। এত বড় দুর্যোগ আগে কখনও হয়নি। তাই বলছি, দয়া করে একটু ধৈর্য ধরুন।’ খবর এনডিটিভি ও আনন্দবাজার পত্রিকার
কারো নাম উল্লেখ না করে বিজেপিসহ বিরোধীদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এখন ক্ষুদ্র রাজনীতির সময় নয়। সাম্প্রদায়িকতায় এখন সুড়সুড়ি দেবেন না।’
২০০৯ সালে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় ‘আইলা’র প্রসঙ্গও টেনে তিনি বলেন, ‘দুর্যোগ যখন আসে সহ্য করতে হয়। ধৈর্য ধরতে হয়। আইলার সময় আমি কিন্তু সমালোচনা করিনি।’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ সময় জানান, ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বিদ্যুৎ সংযোগ ও অন্যান্য আবশ্যকীয় পরিষেবা শুরু হতে আরও সময় লাগবে। বুধবার ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডবে রাজ্যে পরিকাঠামো ও শস্যের মোট ক্ষতি হয়েছে ১ লাখ কোটি রুপি। ওই বিপর্যয়ের পরে দু’দিন কেটেছে। আমরা দিন-রাত কাজ করে চলেছি। দয়া করে ধৈর্য ধরুন। আমরা চেষ্টা করছি যত দ্রুত সম্ভব সব কিছু আবার স্বাভাবিক করতে।’
শনিবার কলকাতা ও অন্যান্য জায়গাতে বিভিন্ন রাস্তায় বিক্ষোভ দেখিয়েছেন বহু মানুষ। তাদের অভিযোগ, বিদ্যুৎ সংযোগ ফেরাতে ও পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার ক্ষেত্রের সরকার খুব ধীরে এগোচ্ছে।
কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলছেন, ‘রাস্তার জমে থাকা পানি পাম্পের সাহায্যে বের করতে, পড়ে থাকা গাছ সরাতে এবং পানি সরবরাহ স্বাভাবিক করতে পাঁচ-ছ’দিন সময় লেগে যাবে।’
এদিকে সোমবার থেকে আন্তঃরাজ্য বিমান পরিষেবা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও কলকাতার দমদম বিমানবন্দরে এখনও পানি জমে আছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা চেষ্টা করছেন যত দ্রুত সম্ভব পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে, যাতে পরিষেবা শুরু করা যায়।