গভীর রাতে
একদিন গভীর রাতে, তারাভরা জোছনায়
আমি একটি কালো গোলাপের ঘ্রাণে মত্ত হলাম।
বর্ণনা করতে লাগলাম গোলাপের গুণ-কীর্তন—
গুনতে ও দেখতে থাকলাম পাপড়ি ও কাঁটা
নারীর নরম মাংসের মতো সব সুললিত পেলবতা—
চিত্র-বিচিত্র
বিমূর্ত সুবাসের সারোৎরার।
আর তখনই আমার মনে হলো
ফাবি আইয়ে আলা রাব্বিকুমা তুকাজ্জিবান…।
মরা নাও নদী
আমি দোষ-গুণ এবঙ
প্রেমহীন একটা মরা নাও ও
নদীর কাছে গেলাম।
তখন ছিল রাত। আমি তারাদের দিকে দৃষ্টি দিলাম—
কিছুক্ষণ ভাসলাম জোছনার জলে
রাত্রিরে
রৌদ্দুরে…
এবঙ একদিন মরা নাও নদীতে জোয়ার এলো।
তোমরা শেকড়ের কাছে যাও
আমি পথ হারিয়ে, পথের ধারে একটা শেকড়ের কাছে গেলাম
পুরনো বটবৃক্ষের শেকড়—
এবঙ একদিন শেকড়টা আমাকে নিয়ে গেল
কতোগুলো ফুুল, পাখি ও পাতাদের কাছে।
নদীর কাছে।
সেখানে প্রজাপতি ও কিছু কিছু জোছনাভরা ভেজা নগ্ন—
নিরাভরণ নারী ও তারাও ছিল।
ছিল অচেনা-অজানা আলোময় সন্ধ্যার রৌদ্দুর…
তোমরা শেকড়ের কাছে, যাও বটবৃক্ষের কাছে।
দূরত্ব
আমি একটা নিঃসঙ্গতার ডুব দিয়ে দেখলাম— এ জগৎ শ্যামল-শুভ্র নয়
ধূলি আর মরু বালুকণায় ডুবে আছে সমস্ত রৌদ্দুর…
প্রেমের পালক
কৈতর—
পানকৌড়ির রক্তে লেপ্টে আছে আমার এই দেহ।
তবে আর কেনো মিছে মায়া বাড়াবো— লাভ কি?
সমুদ্র আমাকে কেবল দূরত্বই দেখায়
দূরত্ব…।
পেলব মাংস
সমুদ্রের ধারে নিয়ে গেলাম বেদনায় ব্যাপৃত হওয়া আমার এই প্রেমময় দেহ।
ব্যথার পিরামিড
তাজমহল—
কাটা কৈতর…
নগ্ন হয়ে ডুব দিলাম সমুদ্রের গহিনে কয়েকবার।
আবারও
আবারও
আমি আবারও আপাদমস্তক ডুব দিলাম সমুদ্রে—
স্বর্ণ হয়ে ভেসে গেল আমার সুডৌল সুন্দর
সঘন সুন্দর বস্ত্রহীন— নিরাভরণ দেহ
নিম্ননাভির নিম্নাঙ্গ, উরুদেশ— পায়রা হয়ে উড়ে গেল
বেদনায় ব্যাপৃত হওয়া আমার এই প্রেমময় দেহ
দেহের আধেক
সরু গলি—
লবণসমেত পেলব মাংস…।
শেকড়-সমুদ্র
রাত্রিওে রৌদ্দুরে তাকাও
তাকাও চারিদিকে—
দৃষ্টি দিঅ উরু অথবা নদীর নিতম্বের দিকে
কতোটা প্রথিত হলো তোমার শেকড়-সমুদ্র…
প্রথিত শেকড় থেকেই একদিন বীজ অঙ্কুরিত হবে।
নায়েগ্রার জলপ্রপাত
কেউ আসেও না আমার কাছে
আমিও যাই না কোথাও—
সামনে থেকে সরিয়ে দিয়েছি
নীল আকাশ
সমুদ্র
নায়েগ্রার জলপ্রপাত—
বেদনার ভারাক্রান্ত নীল আকাশে দেখি
সাইমুম ঝড়— জল-জলোচ্ছ্বাস…।
ছিলাম আমি
আমি তখনকার কথা বলছি
যখন না ছিল শেষ, না ছিল শুরু—
দিন ও রাত্রি।
ছিল শুধু ডিম্বাণু, শুক্র— চারিদিকে অথৈই সমুদ্র
আয়না ও আলোর কুণ্ডলী…
কিন্তু তখনো রৌদ্দুরে ভাসছিল সঘন
জোয়ার জোছনা— আমার পৌরুষের
শাদা-শুভ্র আলোভেজা রঙ…।
অন্ধ প্রেমিক
আমি তার সাথে প্রেম অথবা কামকলা কিছুই করতে পারছি না।
কেননা, তার ছায়া, মায়া— সুডৌল দেহ
কিছুই খুঁজে পাচ্ছি না আমি।
আমি এক অন্ধ প্রেমিক।
হে নদী— সাগর-সমুদ্র আমাকে সাহায্য করো।
আমি
আমি হাঁটতে গেলেই তার দেখা পাই।
পাই জগতের সব রৌদ্র, জোয়ার-ভাটা…
একটা অচেনা-অজানা নদী এসে ঝাপটে ধরে আমাকে—
আমি কায়েশ অথবা একই সাথে মজনু…।
মৃধা আলাউদ্দিন : কবি, কথাশিল্পী ও প্রাবন্ধিক। ঢাকার একটি জাতীয় দৈনিকে কর্মরত।