ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মার্কিন ও ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেছেন, তারা যেন তাদের নিজ নিজ দেশের গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পরিবর্তে পরমাণু সমঝোতা পুনরুজ্জীবনের কাজে মনোনিবেশ করেন। সাঈদ খাতিবজাদে বৃহস্পতিবার রাতে নিজের অফিসিয়াল টুইটার পেজে দেয়া এক পোস্টে এ আহ্বান জানান।
তিনি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টোনি ব্লিঙ্কেন ও ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোমিনিং রাবের সাম্প্রতিক ইসরাইল সফরের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, “মার্কিন ও ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা পরমাণু সমঝোতার ঘোর শত্রু ইসরাইলকে সন্তুষ্ট করতে ভিয়েনা আলোচনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে। এটি অত্যন্ত হতাশাজনক বিষয়।”
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আরো বলেন, “আপনারা যে রক্তপিপাসু ইসরাইলকে সন্তুষ্ট করতে চান সে পরমাণু সমঝোতাকে ধ্বংস করার জন্য তার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়েছে।”
ইংরেজিতে লেখা টুইটার বার্তায় ব্লিঙ্কেন ও রাবকে উদ্দেশ করে খাতিবজাদে আরো বলেন, “নিজেদের গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পরিবর্তে সমস্যা সমাধানের একমাত্র উপায় পরমাণু সমঝোতাকে পুনরুজ্জীবিত করার কাজে আত্মনিয়োগ করুন।”
সম্প্রতি মার্কিন ও ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ইহুদিবাদী ইসরাইল সফরে গিয়ে ইরানর পাশাপাশি পরমাণু সমঝোতার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন।তারা এমন সময় এ কাজ করেন যখন ব্রিটিশ সরকার সরাসরি এবং মার্কিন সরকার পরোক্ষভাবে ভিয়েনায় ইরানের সঙ্গে পরমাণু সমঝোতা পুনরুজ্জীবনের সংলাপে অংশ নিচ্ছে।
২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত পরমাণু সমঝোতাকে আবার আগের অবস্থায় সক্রিয় করার জন্য অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় বর্তমানে ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে ইরানের সংলাপ চলছে।
‘সর্বোচ্চ চাপ’ প্রয়োগের নীতি অনুসরণ করে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৮ সালের মে মাসে পরমাণু সমঝোতা থেকে আমেরিকাকে বের করে নেন। এরপর এক বছর পর্যন্ত ইরান এই সমঝোতা বাস্তবায়নে সম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিল কিন্তু অন্য পক্ষগুলো সমঝোতা বাস্তবায়ন না করায় ৩৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে ইরান সমঝোতার বেশকিছু ধারা বাস্তবায়ন স্থগিত করে দেয়।
বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার দেশকে এই সমঝোতায় ফিরিয়ে আনার আগ্রহ প্রকাশ করলেও তিনি ইরানকে আগে তার প্রতিশ্রুতিতে পুরোপুরি ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন। কিন্তু ইরান বলেছে, আমেরিকা আগে এই সমঝোতা থেকে বেরিয়ে গেছে বলে তাকে আগে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে এতে ফিরে আসতে হবে। ইরান ও আমেরিকার মধ্যকার মতপার্থক্যের এই জায়গাটি নিয়ে মূলত ভিয়েনায় ধারাবাহিক সংলাপ চলছে। সূত্র : পার্সটুডে