ভারতে কেন্দ্রীয় কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে রাজধানী দিল্লিতে কৃষকদের ট্রাক্টর মিছিলের জেরে সহিংস ঘটনার জেরে আজ (বুধবার) সকাল পর্যন্ত ২২ মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল (মঙ্গলবার) ট্রাক্টর মিছিলের সময়ে প্রতিবাদী কৃষক ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে কমপক্ষে ৩০০ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দিল্লি পুলিশের পাশাপাশি ১৫ কোম্পানি আধাসামরিক বাহিনী সিআরপ্পিএফ মোতায়েন করা হয়েছে।
যেসকল প্রতিবাদকারী কৃষক দিল্লির ঐতিহাসিক লালকেল্লায় পৌঁছেছিল, তাদের লালকেল্লা থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। আজ লালকেল্লায় ব্যাপক ভাঙচুরের ছবি প্রকাশ্যে এসেছে। লালকেল্লা মেট্রো স্টেশনে প্রবেশ বন্ধ রাখা হয়েছে। অন্যান্য মেট্রো স্টেশনগুলোতে পরিসেবা স্বাভাবিক রয়েছে।
প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানিয়েছিল, মুকারবা চক, গাজীপুর, আইটিও, সীমাপুরী, নাঙ্গলোই টি পয়েন্ট, টিকরি সীমান্ত এবং লাল কেল্লায় সহিংস ঘটনায় ৮৬ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে এবং ৮টি বাসসহ ১৭ টি বেসরকারি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। গাজীপুর, সিংঙ্ঘু ও টিকরি সীমান্তে বিক্ষোভকারীরা পুলিশ ব্যারিকেড ভেঙে দিয়েছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, যৌথ কিষাণ মোর্চা দিল্লি পুলিশের সাথে একাধিক বৈঠক করেছিল এবং তারা আশ্বাস দিয়েছিল যে প্রস্তাবিত কর্মসূচি অনুযায়ী শান্তিপূর্ণ মিছিল করা হবে। কিন্তু মঙ্গলবার সকালে র্যা লি শুরু হওয়ার আগে সকাল ৮টা থেকে গোলযোগ শুরু হয়। পুলিশ জানিয়েছে, সকাল আটটা নাগাদ কমপক্ষে ৬ হাজার থেকে ৭ হাজার ট্রাক্টর সিংঙ্ঘু সীমান্তে জড়ো হয়েছিল এবং নির্ধারিত রুটের পরিবর্তে তারা মধ্য দিল্লিতে যেতে দেওয়ার দাবি জানিয়েছিল।
পুলিশকে উদ্ধৃত করে গণমাধ্যমে প্রকাশ, দিল্লী পুলিশের আবেদন সত্ত্বেও, ঘোড়ায় নিহঙ্গোরা যারা তলোয়ার, কৃপাণ ইত্যাদিতে সুসজ্জিত ছিল। তাদের নেতৃত্বে কৃষকরা পুলিশের দেওয়া ব্যারিকেড ভেঙে দেয়, যেগুলো মুবারকা চক এবং ট্রান্সপোর্ট নগরের মধ্যে লাগানো হয়েছিল। পুলিশি বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, আইটিওতে যেখানে পুলিশ সদর দফতর রয়েছে, কৃষকদের একটি বিশাল দল গাজীপুর এবং সিংঙ্ঘু সীমান্ত থেকে এসেছিল এবং তারা নয়াদিল্লির দিকে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। তাদের এখানে থামানো হলে সহিংসতা শুরু হয়। কৃষকরা এ সময়ে সহিংস হয়ে পড়ে এবং ব্যারিকেড ভেঙে লোহার রড ক্ষতিগ্রস্থ করে। এমনকি ব্যারিকেডিংয়ে মোতায়েন থাকা পুলিশ সদস্যদের উপরে চড়াও হয়ে গাড়ি চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালায়। অতিরিক্ত বাহিনী ডাকার পরে অবশেষে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। পুলিশ জানিয়েছে এরপরে কৃষকরা লালকেল্লার দিকে এগিয়ে যায়।
আজ সর্বভারতীয় কৃষক সভার সাধারণ সম্পাদক হান্নান মোল্লা বলেন, কৃষকদের আন্দোলনকে বদনাম করার জন্য অবিচ্ছিন্ন প্রচেষ্টা ছিল। আমরা ভীত ছিলাম যে কোনও ষড়যন্ত্র যেন সফল না হয়! কিন্তু শেষ পর্যন্ত ষড়যন্ত্র সফল হয়ে গেছে। কোনওরকম যোগসাজশ ছাড়াই কেউ লালকেল্লায় পৌঁছতে পারে না। এ জন্য কৃষকদের অসম্মান করা ঠিক নয়। সূত্র : পার্সটুডে