ভারতীয় পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভা ও রাজ্য বিধানসভায় নারীদের জন্য এক তৃতীয়াংশ আসনের নিশ্চয়তা দিয়ে এক এক ঐতিহাসিক বিল পাস করেছে। ১৯৯৬ সালে প্রথম প্রস্তাবিত বিলটি কয়েক দশক ধরে কিছু রাজনৈতিক দলের বিরোধিতার মধ্যে ঝুলে ছিল। খবর বিবিসির।
রাজনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণ ত্বরান্বিত করার উদ্দেশ্যেই এই বিল পাস হলো। ভারতের রাজনীতিতে পুরুষের চেয়ে নারীদের অংশগ্রহণ অনেক কম। দীর্ঘদিন ধরেই এই বৈষম্য চলে আসছিল।
বুধবার লোকসভা কয়েক ঘণ্টা তীব্র বিতর্কের পরে প্রায় সর্বসম্মতিতে এটি পাস করে। এখন শুধু ভারতীয় সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভার আইন প্রণেতাদের অনুমোদনের প্রয়োজন। এখানে পাস হলে তা অনুমোদনের জন্য ভারতের রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হবে এবং আইনে পরিণত হবে।
ভারতের জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক নারী। কিন্তু সংসদে মাত্র ১৫ শতাংশ এবং রাজ্য বিধানসভাগুলোয় মাত্র ১০ শতাংশ আসনে নারী আইনপ্রণেতা আছেন। ভারত বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ। কিন্তু নারী আইনপ্রণেতাদের অংশগ্রহণের নিরিখে দেশটি অনেক পিছিয়ে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গত মঙ্গলবার ভারতের সংসদের বিশেষ অধিবেশনে এই বিল উত্থাপন করেন। বিলটির পোশাকি নাম, ‘নারী শক্তি বন্দন অধিনিয়ম’। বিল উত্থাপন করে মোদি সব বিরোধী দলের কাছে এর সপক্ষে সমর্থন চান।
৪৫০ জনের বেশি সংসদ সদস্য বিলের পক্ষে ভোট দেন। দুজন বিরুদ্ধে ভোট দেন। সংসদে ছিলেন না ৮০ জন সংসদ সদস্য। এখন সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভা এবং রাজ্য বিধানসভাগুলোয় এই বিল অনুমোদন দরকার হবে।
সংসদে নারীদের আসন সংরক্ষণের বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে এসেছেন ভারতের লোকসভার সাবেক সদস্য নাজমা হেপতুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘রাজনীতিতে সমানাধিকার পেতে দীর্ঘদিনের অভিযাত্রা ছিল। আজ শেষ পর্যন্ত তা পাওয়া গেল। আজ এক ইতিহাস সৃষ্টি হলো।’
বিলে সংশোধন চেয়ে এর বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন দুই সংসদ সদস্য। তাঁরা হলেন ‘অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন’ (এআইএমআইএম)-এর প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসি এবং তার দলেরই সংসদ সদস্য ইমতিয়াজ জলিল। বিপুল গরিষ্ঠতায় বিল পাসের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি লোকসভার সংসদ সদস্যদের ধন্যবাদ জানান।