গভীর নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড় মোকায় রূপ নিয়েছে

আগের সংবাদ

মোকা বাংলাদেশ থেকে চলে গেছে: আবহাওয়া অধিদপ্তর

পরের সংবাদ

কক্সবাজার থেকে ৯৫০ কি. দূরতে অবস্থান রয়েছে

মোখা এগোচ্ছে, উপকূলবাসীর উৎকণ্ঠা বাড়ছে

ঢাকা স্কাইনিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: মে ১৩, ২০২৩ , ১০:৪৩ পূর্বাহ্ণ

বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় মোখা গত ৬ ঘণ্টায় ১৩ কিমি বেগে উত্তর দিকে অগ্রসর হয়েছে। রোববার দুপুরে স্থলভাগে আছড়ে পড়তে পারে এই ঘূর্ণিঝড়।
ঘূর্ণিঝড় মোখা বঙ্গোপসাগরে ধীরে ধীরে শক্তি সঞ্চয় করছে। ফলে তা স্থলভাগে আছড়ে পড়বে। এই ঘূর্ণিঝড়ের ধ্বংসলীলা নিয়ে নানা রকম আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, এ মুহূর্তে মধ্য ও দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে মোখা। সেখানে গত ৬ ঘণ্টায় ঘূর্ণিঝড়টি বঙ্গোপসাগরের ওই এলাকাতেই ধীরে ধীরে উত্তর দিকে এগিয়েছে।
উত্তরে অগ্রসরের সময় ঘূর্ণিঝড়ের গতি ছিল ঘণ্টায় ১৩ কিলোমিটার। আরও কিছুক্ষণ উত্তর ও উত্তরপশ্চিম দিকে এগোবে মোখা। তার পর সাগরেও উল্টো দিকে বাঁক নেবে।
এ মুহূর্তে ঘূর্ণিঝড় মোখার অবস্থান পোর্ট ব্লেয়ার বন্দর থেকে ৫৩০ কিলোমিটার উত্তরপশ্চিমে। এ ছাড়া বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে মোখার দূরত্ব দক্ষিণপশ্চিমে ৯৫০ কিলোমিটার। মিয়ানমারের সিতওয়ে থেকে ৮৭০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে রয়েছে মোখা।
আবহাওয়া দপ্তরের কর্মকর্তারাও নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর ঘূর্ণিঝড়ের গতিপ্রকৃতি নিয়ে বুলেটিন প্রকাশ করছেন।
আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, যে কোনো ঘূর্ণিঝড়ই যত বেশি সময় ধরে জলভাগের ওপরে অবস্থান করে, তত তার শক্তি এবং ধ্বংসক্ষমতা বেশি হয়। সমুদ্র থেকেই যাবতীয় শক্তি সঞ্চয় করে সে। মোখার ক্ষেত্রেও তাই হচ্ছে।
ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’য় জনগণের জানমালের ক্ষতি যাতে সর্বনিম্ন পর্যায়ে থাকে সে লক্ষ্যে সরকারিভাবে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। উপকূলীয় এলাকার প্রশাসন বৃহস্পতিবার থেকেই জনগণকে সতর্ক করছে।
এ ছাড়া নির্ধারিত আশ্রয়কেন্দ্রের পাশাপাশি স্থানীয় স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন স্থাপনায় আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। জনগণকে সেখানে নিয়ে আসা এবং তাদের খাবার-পানীয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বিভিন্ন স্থানে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে প্রস্তুত আছে মেডিকেল টিম। বিপুলসংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক তৈরি আছেন। কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে খোলা হয়েছে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এসব কাজ তদারকি করছে। ২১টি টিম ১৭ মে পর্যন্ত দিনরাত ২৪ ঘণ্টা মন্ত্রণালয়ে অবস্থান করে এই কাজ চালিয়ে যাবে। এর অংশ হিসাবে শুক্রবারও খোলা ছিল মন্ত্রণালয়।
উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতায় যথারীতি সেনাবাহিনী, নৌ, বিমানবাহিনী ও কোস্টগার্ড প্রস্তুত রয়েছে। পাশাপাশি পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসও মাঠে আছে।
এ ছাড়া পানিসম্পদ ও কৃষি মন্ত্রণালয়ও কাজ করছে। বিশেষ করে মাঠপর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে পাকা ধানসহ অন্যান্য ফসল কাটা ও তুলে আনার ব্যবস্থা নিয়েছেন। তবে বরাবরের মতোই উপকূলীয় জেলাগুলোতে বেড়িবাঁধ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী।
‘অতি প্রবল’ ঘূর্ণিঝড় মোখা বাংলাদেশের উপকূলের দিকে এগোচ্ছে। এ অবস্থায় দেশের তিন বন্দর চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও পায়রায় ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আর মোংলা সমুদ্রবন্দরে আগের দেওয়া ৪ নম্বর স্থানীয় হুশিয়ারি সংকেত বহাল আছে।
শুক্রবার রাত ৯টায় আবহাওয়া অধিদপ্তর বিশেষ বার্তায় এ ঘোষণা দিয়েছে। অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ‘অতিপ্রবল’ ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।