দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি ঘণীভূত হয়ে একই এলাকায় ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’য় পরিণত হয়েছে। এটি আরও ঘণীভূত হতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরে এক নম্বর দূরবর্তী সতর্ক নামিয়ে দুই নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে এ তথ্য জানানো হয়।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের ডিউটি অফিসার বৃহস্পতিবার সকালে জানান, কক্সবাজার ও মিয়ানমারের মাঝামাঝি এলাকায় রোববার সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে এই ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে পারে।
আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও আশেপাশের এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হয়ে একই এলাকায় ঘূর্ণিঝড় মোকায় পরিণত হয়েছে৷ এটি বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ২৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ২২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ২৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ২২৫ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।
এটি আরও ঘণীভূত হয়ে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে এবং পরবর্তীতে দিক পরিবর্তন করে ক্রমশ উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে এক নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে দুই নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখানো হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
এদিকে গভীর নিম্নচাপটি সুপার সাইক্লোনে রূপ নিতে পারে এ আশঙ্কায় সব ধরনর প্রস্তৃুতি নিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। গভীর সমুদ্র থেকে সব নৌযানকে সরিয়ে আনা হয়েছে। বুধবার বিকালে সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেন, আমরা সবদিক থেকেই প্রস্তুত আছি। প্রতিবারের মতো এবারও ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলা করতে পারব। সেনা, নৌ, কোস্টগার্ড প্রস্তুত আছে। এটা সুপার সাইক্লোন হবে, এমন পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, এটি ১৩ মে রাত থেকে ১৪ মে সকালের মধ্যে আঘাত হানতে পারে। বাংলাদেশের কক্সবাজারে এটি আঘাত হানতে পারে। বিশেষ করে সেন্টমার্টিনের নিচু এলাকায় আঘাত হানতে পারে। রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়ি ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার একটা আশঙ্কা আছে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এলাকায় আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থানকারীদের জন্য নগদ ২০ লাখ টাকা, চাল এবং শুকনা খাবার পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি। পাশাপাশি গভীর সমুদ্র থেকে সব নৌযানকে সরিয়ে আনা হয়েছে।