রাজধানীর মিরপুরে জামায়াতের বৈঠক থেকে গ্রেপ্তার বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল শাখার উপব্যবস্থাপক আবু মাসুম সিদ্দিকীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে গ্রেপ্তার এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) প্রকল্প কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল ফাহিমকে তার দাপ্তরিক কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অভিযানে গ্রেপ্তার ৫৮ জনের মধ্যে আরও দু’জন সাবেক সরকারি কর্মকর্তাও ছিলেন। তাঁরা হলেন– পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক কর্মকর্তা তাজিরুল ইসলাম ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা আবদুল আজিজ চিশতী। তাজিরুলের গ্রামের বাড়ি পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া। আর আজিজের বাড়ি পাবনার চাটমোহরে। দু’জনই পরিবার নিয়ে বর্তমানে মিরপুরে বসবাস করেন। তাজিরুল ও আজিজ নিজেদের জামায়াতের রুকন বলে দাবি করেন। বর্তমান ও সাবেক চার সরকারি কর্মকর্তাসহ গ্রেপ্তারদের মধ্যে ৪৮ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। দু’এক দিনের বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা মামলায় তাঁদের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করবে পুলিশ। বাকি ১০ জনকে এরই মধ্যে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এদিকে গ্রেপ্তার দুই কর্মকর্তা জামায়াতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নন বলে দাবি করেছেন দলটির ঢাকা মহানগর উত্তরের প্রচার সম্পাদক আতাউর রহমান সরকার। তবে তথ্যানুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, ফাহিমের পুরো পরিবার জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তাঁর বাবার নাম মাওলানা গোলাম মোর্শেদ। তিনি যশোরের চৌগাছা উপজেলা জামায়াতের বর্তমান আমির। জামায়াতের স্থানীয় নেতারা জানান, গোলাম মোর্শেদ ছাত্রজীবন থেকেই শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ছাত্রজীবন শেষে যুক্ত হন জামায়াতে ইসলামীর সাংগঠনিক কার্যক্রমে। টানা এক যুগ চৌগাছা উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর হন উপজেলা সভাপতি। দুই মেয়াদে গত পাঁচ বছরের অধিক সময় ধরে রয়েছেন এ পদে।
চৌগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম সবুজ সমকালকে জানান, জামায়াত নেতা গোলাম মোর্শেদের বিরুদ্ধে নাশকতার অভিযোগে থানায় ৫টি মামলা রয়েছে। থানার এসব মামলায় একাধিকবার গ্রেপ্তারও হন তিনি। এরই মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা সিদ্দিকীর মোবাইল ফোন পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও তথ্যপ্রযুক্তিগত তদন্তে জামায়াতের সঙ্গে তাঁর সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে পুলিশ। নিয়মিত জামায়াতের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তাঁকে নিমন্ত্রণ করা হতো।
শনিবার রাতে মিরপুর-১ নম্বরের ক্যাপিটাল টাওয়ারে ফোর-সি নামে একটি রেস্তোরাঁ থেকে চার কর্মকর্তাসহ জামায়াতের ৫৮ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে দারুসসালাম থানা পুলিশ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, আলোচনা সভার নামে স্বাধীনতা দিবস ঘিরে বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা করছিল জামায়াত।