প্রশাসনকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ সিইসির

আগের সংবাদ

সরকারি টাকায় বিমানের প্রথম শ্রেণিতে বিদেশ ভ্রমণ স্থগিত

পরের সংবাদ

রাশিয়া আসলে কী পরিমাণ অর্থ ব্যয় করছে ইউক্রেন যুদ্ধে

ঢাকা স্কাইনিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: মে ৩১, ২০২৩ , ৭:৪০ অপরাহ্ণ

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়া। এতে ইউক্রেনের বিপুল পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তবে রাশিয়ার তেমন ক্ষতি হয়নি বলেই জানাচ্ছে দ্য ইকোনমিস্ট। শুধু তাই নয়, রাশিয়ার অর্থনীতির যতটা ক্ষতি হবে বলে ধারণা করা হয়েছিল, তা–ও হয়নি। সে সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধ বাবদ রাশিয়ার ব্যয়ও এখন পর্যন্ত অনেক কম—সব মিলিয়ে ৬ হাজার ৭০০ কোটি ডলার।
রাশিয়ার বাজেট সম্পর্কে পরিষ্কারভাবে কিছু জানা যায় না, বিশেষ করে তার সামরিক বাজেট সম্পর্কে তো আরও কম জানা যায়। সে কারণে ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়া ঠিক কত ব্যয় করছে, সে বিষয়ে দ্য ইকোনমিস্টও হলফ করে কিছু বলতে পারছে না। তবে বিভিন্ন বিশ্লেষক ও নিজস্ব বিশ্লেষণের ভিত্তিতে দ্য ইকোনমিস্ট যুদ্ধের এক হিসাব বের করেছে।
মূলত এক তুলনার ভিত্তিতে এই হিসাব বের করার চেষ্টা করা হয়েছে। বিষয়টি হলো, যুদ্ধের আগে রাশিয়া প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তায় যত ব্যয় করবে বলে ভেবেছিল এবং কার্যত তারা যত ব্যয় করছে, তার ব্যবধান থেকে এই হিসাব বের করার চেষ্টা করেছে দ্য ইকোনমিস্ট। তাতে দেখা গেছে, সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে ৬ হাজার ৭০০ বিলিয়ন ডলারের মতো, যা তাদের জিডিপির ৩ শতাংশ।
ঐতিহাসিক বিচারে এটা খুবই সামান্য অঙ্ক। রাশিয়া যুদ্ধ-বিগ্রহে এর চেয়ে ঢের বেশি ব্যয় করেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ যখন তুঙ্গে, রাশিয়া তখন জিডিপির ৬১ শতাংশ পর্যন্ত যুদ্ধে ব্যয় করেছে। একই সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাজেট ছিল তার জিডিপির ৫০ শতাংশ।
প্রশ্ন হলো, রাশিয়া কেন এত কম ব্যয় করছে। দ্য ইকোনমিস্ট এর তিনটি কারণ খুঁজে বের করেছে। প্রথমত, রাজনৈতিক কারণে এই যুদ্ধের ব্যয় কম। রুশ সরকারের অনেকেই দেখাতে চান যে এই যুদ্ধ কার্যত ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ সামরিক অভিযান। সে কারণে এতে জিডিপির অনুপাতে দুই অঙ্কের ব্যয় করা বাতুলতা।
দ্বিতীয় কারণ অর্থনৈতিক। এই যুদ্ধের কলেবর বাড়াতে গেলে রুশ জনগণ বিপুল ক্ষতির মুখে পড়বে। রুবলের নোট ছাপিয়ে কাজ চালাতে গেলে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়বে, মানুষের জীবনযাত্রার মান কমে যাবে। ব্যাংক খাত থেকে ঋণ নিলেও একই পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। কর বাড়িয়ে যুদ্ধ ব্যয় বাড়াতে গেলে মানুষের ব্যক্তিগত আয় কমে যাবে।
২০২৪ সালে রাশিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন, তার আগে তেমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে ভ্লাদিমির পুতিনের বিপদ। পুতিনের জয় নিশ্চিতই বলা যায়, তারপরও তিনি চান না, সরকারের বিরুদ্ধে বড় ধরনের গণজমায়েত হোক, ২০১১ সালের নির্বাচনের আগে যেমনটা হয়েছিল।
সম্প্রতি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ‘জাতীয় প্রতিরক্ষা নিঃসন্দেহে আমাদের শীর্ষ অগ্রাধিকার, কিন্তু এ নিয়ে কৌশলগত সমাধান খুঁজে বের করতে গিয়ে অতীতের মতো অর্থনীতি ধ্বংস করা চলবে না।’
তৃতীয় কারণটি আরও বড় পরিসরে প্রতিরক্ষা অর্থনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। এখনকার সশস্ত্র বাহিনী আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি দক্ষ। অস্ত্র এখন আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় নিখুঁত, ফলে মানুষের প্রয়োজন হয় কম।
এ ছাড়া অর্থনীতির কস্ট ডিজিস তত্ত্বানুসারে, উচ্চফলনশীল খাতে সময়ের সাপেক্ষে জিডিপির অনুপাতে ব্যয় কমতে থাকে। সে কারণে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের চেয়ে অনেক কম খরচ করেও রাশিয়া এখনো সামরিক শক্তিতে বলীয়ান।