বাংলাদেশের পাশে থাকবে কাতার

আগের সংবাদ

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত

পরের সংবাদ

হাইকোর্টের প্রশ্ন, এনবিআর চেয়ারম্যান নিজেকে কি সম্রাট ভাবেন

কোর্ট প্রতিবেদক

প্রকাশিত: মার্চ ৬, ২০২৩ , ১১:২৪ পূর্বাহ্ণ

ই-অরেঞ্জের লেনদেনে রাজস্ব দিয়েছে কিনা সে বিষয়ে এনবিআরের প্রতিবেদন দাখিল না করার উষ্মা প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।
রোববার (৫ মার্চ) শেষ বারের মতো সময় দিয়ে হাইকোর্ট এনবিআর চেয়ারম্যানের ভূমিকা নিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর উদ্দেশ্যে বলেন, উনি (এনবিআর চেয়ারম্যান) কেন আদালতের আদেশ মানছেন না? উনি নিজেকে কি সম্রাট ভাবছেন? যে তথ্য চাওয়া হয়েছে তা এনবিআরের চেয়ারম্যানকে দাখিল করতে বলবেন।
আমরা শেষ সুযোগ দিচ্ছি। এবার প্রতিবেদন না পেলে ডাকা হবে।
এরপর ২৭ মার্চ পরবর্তী শুনানি ও আদেশের তারিখ রাখেন বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুল কাইয়ুম। বিএফআইইউ’র পক্ষে ছিলেন শামীম খালেদ আহমেদ।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
দুদকের পক্ষে আইনজীবী এ কে এম ফজলুল হক।
গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের ঘটনায় অভিযুক্ত ই–অরেঞ্জের সঙ্গে সম্পৃক্ত সোহেল রানাকে ২০২১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সীমান্ত এলাকা থেকে আটক করা হয়। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্যরা অনুপ্রবেশের অভিযোগে পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার চ্যাংড়াবান্ধা সীমান্ত থেকে তাকে আটক করে। পরে ৫ সেপ্টেম্বর তাকে সাময়িক বরখাস্তের কথা জানায় ঢাকা মহানগর পুলিশ।
ই-অরেঞ্জ থেকে ৭৭ কোটি টাকার পণ্য কিনে প্রতারণার শিকার ৫৪৭ জন গ্রাহকের পক্ষে মো. আফজাল হোসেন, মো. আরাফাত আলী, মো. তরিকুল আলম, সাকিবুল ইসলাম, রানা খান ও মো. হাবিবুল্লাহ জাহিদ নামের ছয়জন গ্রাহক গত বছরের মার্চে হাইকোর্টে রিট করেন।
রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত বছরের ৭ এপ্রিল হাইকোর্ট রুল জারি করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) এর কাছে প্রতিবেদন চান। সে আদেশ অনুসারে সংশ্লিষ্ট বিবাদীরা প্রতিবেদন দাখিল করে।
পুলিশের পক্ষ থেকে প্রতিবেদন দেওয়া হলেও এনবিআর প্রতিবেদন দেয়নি। পরে ই-অরেঞ্জের কার্যক্রম চালানোর সময় লেনদেনের বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে কিনা, তা জানাতে বলা হয় এনবিআর চেয়ারম্যানকে। সেই সঙ্গে ই-অরেঞ্জ সংশ্লিষ্ট অভিযোগ স্পষ্ট করে ৩০ দিনের মধ্যে ফের প্রতিবেদন দিতে বলা হয় বিবাদীদের। এ আদেশের পর নির্ধারিত তারিখে প্রতিবেদন না দিয়ে রাষ্ট্রপক্ষ দুই সপ্তাহ সময় নেয়। সে ধারাবাহিকতায় গত ২৯ জানুয়ারি শুনানিতে উঠলে ফের সময় চাওয়া হয়। তখনো আদালত সময় দেন।
শুনানিতে ই-অরেঞ্জ প্রতারণার মামলার তদন্তের বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক বলেন, মামলার তদন্ত চলছে। গত বৃহস্পতিবার একেবারে শেষ বেলায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাগজপত্র হাতে এসেছে। যে কারণে হলফনামা করা হয়নি। আগামী সপ্তাহে দাখিল করা যাবে।
সোহেল রানার অবস্থান জানিয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘পত্রিকায় এসেছে, জামিন নিয়ে ভারতের কারাগার থেকে সোহেল রানা পালিয়ে গেছেন। ভারত থেকে তথ্য নিয়ে আসার চেষ্টা চলছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইজিপির প্রতিবেদন একই ধরনের। ’
রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী এম আবদুল কাইয়ুম লিটন তখন বলেন, ‘আদেশ প্রতিপালনের জন্য সময় চাইলে আদালত সময় দিতে পারেন। এনবিআরের চেয়ারম্যান তো প্রতিবেদনই দাখিল করেননি। আর শেখ সোহেল রানার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারির জন্য ইন্টারপোল কিছু তথ্য চেয়েছিল। দেওয়া হয়নি বলে দেখা যাচ্ছে।
এ পর্যায়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘সোহেল রানার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড অ্যালার্ট জারি হয়েছে, সেই নম্বরও আছে। হলফনামা করে দাখিল করা হবে। তবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের রিপোর্ট পাইনি।