কক্সবাজারের টেকনাফে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠেছে। ওই শিক্ষকের নাম কামাল উদ্দিন। তিনি উপজেলার হ্নীলা ইউপির রঙ্গীখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক । তিনি প্রধান শিক্ষকের প্রশ্রয়ে এমন গর্হিত কাজ করার সাহস পাচ্ছেন বলে অভিয়োগ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের।
অভিযোগ ওঠেছে, সহকারী শিক্ষক কামাল উদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে শ্রেণিকক্ষে পড়ানোর সময় বড় মেয়েদের গালধরে টানাটানি করেন এবং স্পর্শকাতর অঙ্গে হাত দিয়ে যৌন হয়রানি করে। প্রতিনিয়ত ছাত্রীদের সঙ্গে এ ধরনের কুরুচিপূর্ণ গর্হিত কাজ করে বলে একাধিক ছাত্রীরা জানিয়েছে।
হালিমা আক্তার (ছদ্মনাম) নামে একজন ছাত্রী জানান, কামাল উদ্দিন স্যার, আমাদের গাল ধরে টেনেটেনে জামাই কে জিজ্ঞেস করে । সবসময় ওই শিক্ষক আমাদের ওপর অত্যাচার করেন। আমাদের লজ্জা লাগে। আমরা এই স্যারের কাছে আর পড়তে চাই না। আমরা ওনার শাস্তি চাই।
এদিকে ওই স্কুল থেকে অভিযুক্ত শিক্ষক কামাল উদ্দিনকে সরিয়ে দেয়ার দাবি তুলেছেন ছাত্রছাত্রী ও স্থানীয়রা।
বুধবার ১৫ ফেব্রুয়ারি বিকালে আড়াইটার দিকে ঘটনার বিষয়ে জানতে সরেজমিনে গেলে, গণমাধ্যমকর্মী দেখে ক্লাস থেকে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত শিক্ষক কামাল উদ্দিন । পরে কয়েকজন ছাত্রছাত্রী দৌঁড়ে এসে প্রতিবেদককে জানান, তিনি বাথরুমে ঢুকে দরজা আটকিয়ে দিয়েছে। এক ঘণ্টা অপেক্ষা করেও অভিযুক্ত শিক্ষক বাথরুম থেকে বের না হওয়ায় সরাসরি কথা বলার সুযোগ হয়নি। পরে অভিযোগের বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক কামাল উদ্দিন বলেন এগুলি ষড়যন্ত্র। ইতোপূর্বে কেন মুচলেকা দিয়েছেন জানতে চাইলে কোনো সৎ উত্তর দিতে পারেননি তিনি । সাংবাদিক দেখে ক্লাস ছেড়ে বাথরুমে পালানোর কথা জানতে চাইলে বলেন, মেম্বারের সঙ্গে নাকি বাথরুমের ভেতরে কথা বলতে গেছেন ।
সরেজমিনে আরও জানা যায়, অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক কামাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে স্থানীয়রা বলেন,ওই শিক্ষক আসার পর থেকে ওনার বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ একাধিকবার ওঠেছে, কিন্তু রহস্যজনক কারণে প্রতিবারই ধামাচাপা পড়ে যায়, শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি একবারও। মূলত প্রধান শিক্ষকের প্রশ্রয়ের কারণেই ওই শিক্ষক এসব ঘৃণিত কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন বলে জানান স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি।
প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিন ইতিপূর্বে অভিযুক্ত কামাল উদ্দিন থেকে মুচলেকা নেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, এ ধরনের কাজের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলেই তো মুচলেকা নেয়া হয়েছে । প্রধান শিক্ষকের প্রশ্রয়ের কথা জানতে চাইলে তিনি চুপ করে থাকেন, কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার অশীষ বোস জানান, অভিযোগ পেলে অবশ্যই তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে ।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও ) বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।