বায়ুদূষণে আজও শীর্ষে রয়েছে ঢাকা। এই নিয়ে বায়ুদূষণে টানা ষষ্ঠ দিনের মতো শীর্ষে অবস্থান করছে শহরটি। ২৬ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) স্কোর ৩৭২। ২৮৮ একিউআই স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে উজবেকিস্তানের রাজধানী তাসখন্দ। ২৪০ একিউআই স্কোর নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে মঙ্গোলিয়ার উলানবাতোর।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে পাকিস্তানের লাহোরকে ডিঙিয়ে ঢাকা শীর্ষে উঠে আসে। বায়ুদূষণ সূচকে ঢাকার মান ছিল ২৪৩। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা লাহোরের ছিল ২৩৪। গতকাল ও গত মঙ্গলবার—এই দুই দিন বায়ুদূষণের সূচকে খুব অস্বাস্থ্যকর অবস্থানে ছিল ঢাকা। এর আগের তিন দিন এই নগর ছিল ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে।
বৈশ্বিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সুইজারল্যান্ডভিত্তিক ওয়েবসাইট আইকিউ এয়ার বিশ্বের প্রায় ১০০টি বড় শহরের বায়ুদূষণ নিয়ে লাইভ প্রতিবেদন প্রকাশ করে থাকে। সাধারণত অতিমাত্রায় বায়ুদূষণ এলাকায় রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়। এ ছাড়া অধিক সতর্কতার জন্য সাধারণের চলাচল সীমিত করার সুপারিশ করা হয়। সার্বিকভাবে ঢাকার মান ৩০০-র নিচে থাকলেও রাজধানীর মহাখালী এলাকার বাতাস খুব ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। গতকাল মহাখালীর বাতাসের সূচকে অবস্থান ছিল ৩৪৯।
আইকিউ এয়ারের তথ্য অনুযায়ী, একিউআই মান ০ থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকলে তাকে ভালো বলা হয়। ৫১ থেকে ১০০-এর মধ্যে থাকলে সেটি মডারেট ভালো বলা হয়। ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে থাকলে সেটি বিশেষ সংবেদনশীল মানুষের জন্য অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। অন্যদিকে ১৫১ থেকে ২০০-এর মধ্যে বায়ুর মান থাকলে তাকে অস্বাস্থ্যকর, ২০১ থেকে ৩০০ থাকলে তাকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। অন্যদিকে ৩০১ থেকে ৫০০ পর্যন্ত বায়ুর মানকে হ্যাজার্ডাস বা বিপজ্জনক বলা হয়। গতকাল রাজধানীর মহাখালীর বায়ুমান পরিমাপক স্টেশন আইসিডিডিআরবিতে বায়ুদূষণের সূচক ছিল ৩৪৯। ইটভাটা অঞ্চল হিসেবে পরিচিত হেমায়েতপুরে ছিল ২৯৮, ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস স্টেশনে ছিল ২৬৬। শহর হিসেবে ঢাকা ও লাহোরের পরই গতকাল তৃতীয় অবস্থানে ছিল উজবেকিস্তানের তাশখন্দ, চতুর্থ অবস্থানে ছিল ভারতের দিল্লি, পঞ্চম ছিল ভারতের আরেকটি শহর কলকাতা এবং ষষ্ঠ ইরাকের বাগদাদ।
পরিবেশ বিশ্লেষকরা বলছেন, সাধারণত কলকারখানা ও যানবাহনের কারণে বায়ু অতিমাত্রায় দূষিত হচ্ছে। অন্যদিকে বন ধ্বংসের ফলে অক্সিজেন ও কার্বন ডাই-অক্সাইডের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রক যন্ত্র থেকে নির্গত সিএফসি বাতাসে মিশে ওজোন ধ্বংস করছে। এতে বায়ুদূষণ বাড়ছে। এ বিষয়ে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের পরিচালক ও ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের (আইইউবি) অধ্যাপক সালিমুল হক বলেন, বায়ুদূষণে ধুলার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে গাড়ি ও শিল্প-কারখানার ধোঁয়া। বাতাসে ধূলিকণা আগের চেয়ে অনেক বেশি বেড়েছে। আগে এত মেগাপ্রজেক্ট ও গাড়ি ছিল না। পাশাপাশি ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার জলাশয় ভরাট হওয়ায় ধুলার নতুন উৎস তৈরি হয়েছে।