আমেরিকার খ্যাতিমান রাজনৈতিক বিশ্লেষক, লেখক এবং যুদ্ধবিরোধী কর্মী বিল ডোরেস বলেছেন, তেলের মজুদের ওপর মার্কিন কোম্পানিগুলোর যে একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল তা পুনরুদ্ধারের জন্য ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের বিরুদ্ধে প্রথম বুশ প্রশাসন যুদ্ধ শুরু করেছিল। ইরানের বিরুদ্ধে আমেরিকার পক্ষ থেকে বর্তমানে যে নিষেধাজ্ঞা এবং যুদ্ধের হুমকি দেয়া হয় তার সেই দীর্ঘ মেয়াদি যুদ্ধের অংশ।
ইরানের ইংরেজি ভাষার নিউজ চ্যানেল প্রেস টিভিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বিল ডোরেস এসব কথা বলেছেন। তিনি বলেন, এটি বোঝা খুব গুরুত্বপূর্ণ যে, ইরানের বিরুদ্ধে আমেরিকা দীর্ঘদিন ধরে যে ঘৃণা-বিদ্বেষ ছড়িয়ে আসছে সেটি প্রকৃতপক্ষে পরমাণু শক্তি বা সামরিক সক্ষমতার কারণে নয়। এটি দীর্ঘ মেয়াদী যুদ্ধের অংশ।
ডোরেস বলেন, ইসলামী বিপ্লবের আগে যখন স্বৈরশাসক রেজা শাহ ইরানের ক্ষমতায় ছিলেন তখন ইরান প্রকৃতপক্ষে আমেরিকার উপনিবেশ ছিল। আমেরিকার কোম্পানিগুলো বিপুল পরিমাণ অস্ত্র শাহের কাছে বিক্রি করতো, এমনকি মার্কিন কোম্পানিগুলো সে সময় ইরানকে পরমাণু স্থাপনা তৈরি করে দেয়ার চুক্তি করেছিল। তারা এখন বর্ণবাদী ইসরাইলের কাছে যেভাবে সীমাহীন অস্ত্র বিক্রি করে থাকে তেমনি অস্ত্র বিক্রি করতে ইরানের কাছে। এর বিপরীতে রেজা শাহ ইরানের তেল বিক্রির অর্থ মার্কিন ব্যাংকগুলোতে জমা করতেন। ইরানের বিরুদ্ধে আমেরিকা যে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে তাতে তারা বিজয়ী হতে পারবে না কারণ এটা ১৯৫৩ সাল নয়।”
আমেরিকার এ বিশ্লেষক বলেন, জো বাইডেন ইয়েমেনে সৌদি আগ্রাসন বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এবং আমেরিকা এই যুদ্ধে অংশ নেবে না বলে জানিয়েছেন কিন্তু এখনো পর্যন্ত তিনি তার কিছুই করেন নি।
ডোরেস আরো বলেন, “করোনাভাইরাস মোকাবেলার জন্য নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভ্যাকসিন দেয়া হচ্ছে না অথচ মার্কিন প্রশাসন পারস্য উপসাগর ও ভূমধ্যসাগরে যুদ্ধ করার জন্য নৌবহরগুলোকে বিপুল পরিমাণ অর্থ দিচ্ছে। শুধু তাই নয়, ইসরাইলের কাছে তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, ইরাক এবং সিরিয়াতে সেনা মোতায়েন থাকবে। এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে আমেরিকার ভেতরে গণ আন্দোলন প্রয়োজন যাতে ইরান, ভেনিজুয়েলা, কিউবা এবং অন্য দেশের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার অবসান ঘটে। আমাদের দেশের জনগণের কর্মসংস্থান প্রয়োজন, গৃহায়ন প্রয়োজন, স্বাস্থ্যসেবা প্রয়োজন; যুদ্ধের প্রয়োজন নেই।” সূত্র : পার্সটুডে