বাংলাদেশে গুম-বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড অবলীলায় ঘটে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এটা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। এই অবস্থার পরিবর্তনে জনগণকে জেগে উঠতে হবে।
তিনি বলেন, এখন যে লড়াই তা সবার অধিকার ফিরিয়ে আনবার লড়াই, এই সংগ্রাম স্বাধীনতাকে রক্ষা করার লড়াই, এই সংগ্রাম ও লড়াই হচ্ছে অস্তিত্বকে রক্ষা করার লড়াই। এই লড়াইয়ে হতাশ হলে চলবে না, এই লড়াইয়ে পরাজিত হলে চলবে না। এই লড়াইয়ে জয়লাভ করতেই হবে।
রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে বুধবার স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনটির গুম-বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার নেতাকর্মীদের ৪০টি পরিবারকে সহযোগিতা প্রদানের অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, মেজর সিনহাকে হত্যার পর দেশের সেনা প্রধান আর পুলিশের আইজি পাশাপাশি বসে যখন সংবাদ সম্মেলন করেন এবং বলেন- এটা একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। তখন সাধারণ মানুষ কার কাছে যাবে? কোথায় যাবে?
গুম হওয়ার পরিবারের আর্তনাদের কথা জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আর কতকাল, কতদিন এভাবে চোখের অশ্রু ফেলব? আজকে যারা স্বাধীনতার জন্য লড়াই করে, যারা গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করে, অধিকারের জন্য লড়াই করে তাদেরকে নির্মম-নির্যাতন-অত্যাচারের শিকার হতে হয়। তারা আর্তনাদ করছেন তাদের প্রিয়জনদের ফিরিয়ে পাওয়ার জন্য।
তিনি বলেন, নিঃসন্দেহে এই লড়াইয়ে আমরা জয়ী হবো। আমরা এটা বিশ্বাস করি। তা না হলে মানব জাতির ইতিহাস ভুল হয়ে যাবে। জোর করে কেউ টিকতে পারে নাই, নমরুদ পারে নাই, ফেরাউন পারে নাই, হিটলার পারে নাই। সুতরাং জোর করে কেউ টিকতে পারবে না।
করোনা মহামারীর কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনুষ্ঠানে গুম ও খুন হওয়া ঢাকা মহানগরের এসএম আদনান চৌধুরী, কাওসার হোসেন, ডা. সগীর, নজরুল ইসলাম, মো. মজিদ, ঢাকা জেলার ফয়সল উদ্দিন হাশেমী ও মানিকগঞ্জের মো. শাওন- এই সাত পরিবারের সদস্যের হাতে আর্থিক সহযোগিতার টাকা তুলে দেন দলের মহাসচিব।
স্বেচ্ছাসেবক দলের সদ্য প্রয়াত সভাপতি শফিউল বারী বাবুর স্মৃতির প্রতিও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিএনপি মহাসচিব।
স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েলের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ২০১৪ সালে গুম হওয়া এসএম আদনান চৌধুরীর বাবা রুহুল আমিন চৌধুরী ও কাওসার হোসেনের মেয়ে লামিয়া আক্তার, ২০০৯ সালে নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সাজেদা বেগম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।